শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম ছিলেন একজন খ্যাতিমান অধ্যাপক, লব্ধ প্রতিষ্ঠিত আইনজীবী, পরিচ্ছন্ন রাজনীতিবিদ। ১৯৫২, ৬২, ৬৬, ৬৮, ৬৯ এর জাতীয় আন্দোলন ও গণঅভ্যুত্থানে এবং ১৯৭১ সনের মহান মুক্তিযুদ্ধের অগ্নিঝরা দিনগুলোতে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর অবর্তমানে এই অকুতোভয় বীর সেনানী জাতিকে দিয়েছিলেন সফল নেতৃত্ব। অসাধারণ দেশ প্রেম, নিষ্ঠা, সততা এবং তাঁর বৈচিত্র্যময় কর্মজীবন তাঁকে প্রতিষ্ঠিত করেছিল জাতীয় নেতৃত্বে, বাঙালী জাতিকে বসিয়েছিল শ্রদ্ধার আসনে। বাংলাদেশের অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম ময়মনসিংহ শহরেই কাটিয়েছেন তাঁর শৈশব, কৈশোর। ময়মনসিংহকে ভালবেসে, ময়মনসিংহ থেকেই তিনি শুরু করেছিলেন তাঁর সকল কর্মকাণ্ড। মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা প্রতিষ্ঠা তথা বাঙালীর জাতির রাজনৈতিক অধিকার ও অর্থনৈতিক মুক্তি এনে দিতে গিয়ে ১৯৭৫ সালে ৩ প্রতিক্রিয়াশীল চক্রের হাতে কারাবন্দি অবস্থায় নিহত হন নিমর্মভাবে। প্রতিক্রিয়াশীল চক্র উপ-রাষ্ট্রপতির লোভ দেখিয়েও তাঁকে আদর্শচ্যুত করতে পারেনি। তিনি মৃত্যুকে বরণ করে নিয়েছিলেন হাসি মুখে। ১৯৮৯ সালে শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম এর কয়েকজন প্রিয় ছাত্র, সহকর্মী এবং গুণগ্রাহী তাঁর বর্ণাঢ্য কর্মময় জীবনকে ধরে রাখার প্রয়াসে ময়মনসিংহ শহরে প্রতিষ্ঠা করেন শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম স্মৃতি পরিষদ। ১৯৯৯ সালের ১ জুলাই শহরের প্রাণ কেন্দ্রে শ্যামাচরণ রায় রোডে কাশি কিশোর কারিগরি বিদ্যালয়ের পরিত্যক্ত একখণ্ড বাড়ীতে শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম স্মৃতি পরিষদ প্রতিষ্ঠা করেন জাতির এ শ্রেষ্ঠ সন্তানের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে "শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম কলেজ”।[১]
১৯৮৯ সালে “শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম স্মৃতি পরিষদ” প্রতিষ্ঠার পরপরই এই মহান ব্যক্তিত্বের স্মৃতিকে অম্লান করে রাখার উদ্দেশে একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব উঠে আসে সংগঠনের সভা গুলোতে। তবে আনুষ্ঠানিক উদ্যোগ গ্রহণে অনেক সময় পেরিয়ে যায়। ১৯৯৫ সালে ময়মনসিংহ শহরে উচ্চ মাধ্যমিক শ্রেণীতে ছাত্রদের অধ্যায়নের একমাত্র সরকারি প্রতিষ্ঠান আনন্দ মোহন কলেজ থেকে সরকারী নির্দেশে উচ্চ মাধ্যমিক শ্রেণী উঠিয়ে দেয়া হলে অভিভাবকগণ হয়ে পড়েন উদ্বিগ্ন। শহরের অন্যান্য বেসরকারী কলেজ গুণগত মান সম্পন্ন না থাকায় কিংবা কোন প্রতিষ্ঠানকে সরকার সরকারীকরণ না করায় বিষয়টি ময়মনসিংহবাসীর দাবীতে পরিণত হয়। ১৯৯৮ সালে ২৮ আগস্ট শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম স্মৃতি পরিষদের সভায় একটি মান সম্পন্ন এবং শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলামের নামে কলেজ প্রতিষ্ঠার বিষয়টি আলোচ্যসূচীতে অন্তর্ভুক্ত হয়। বেসরকারী ল্যাবরেটরী উচ্চ বিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত সে সভায় প্রধান আইনজীবী এবং স্মৃতি পরিষদের আহবায়ক এম. জুবেদ আলী সাহেবের সভাপতিত্বে ময়মনসিংহ শহরে একই নামে একটি সরকারী ও একটি বেসরকারী উচ্চ বিদ্যালয় থাকায় বেসরকারী ল্যাবরেটরী উচ্চ বিদ্যালয়টির নাম পরিবর্তন করে “সৈয়দ নজরুল ইসলাম স্কুল এন্ড কলেজ” করার প্রস্তাব সর্ব সম্মতিক্রমে গৃহীত হয় এবং এক পত্রে স্কুল ব্যাবস্থাপনা কমিটির কাছে বিষয়টি সহানুভূতির সাথে বিবেচনা এবং ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম স্মৃতি পরিষদের পক্ষে অনুরোধ জানানো হয়। বিষয়টি জানাজানি হলে স্কুলটির সিংহভাগ অভিভাবক সমর্থন জ্ঞাপন করেন। স্কুলটির প্রধান শিক্ষক বীর মুক্তিযোদ্ধা এম.এ কাসেম তৎকালীন জেলা প্রশাসক জনাব মোঃ রফিকুল ইসলামের সাথে বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন। ১৯৯৯ সালের ৬ মে জেলা রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির কার্যালয়ে শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম স্মৃতি পরিষদের এক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয়। আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে সভায় উপস্থিত হন আনন্দ মোহন কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ প্রফেসর শামসুল ইসলাম, পদার্থবিদ্যা বিভাগের প্রাক্তন বিভাগীয় প্রধান প্রফেসর আবুল কালাম, নেত্রকোণা সরকারী কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ প্রফেসর মজিবর রহমান, আনন্দ মোহন কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ প্রফেসর মোঃ মুজিবুর রহমান। সভায় প্রখ্যাত শিক্ষাবিদগণ শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলামের নামে কলেজ প্রতিষ্ঠার উদ্দ্যোগকে এবং কলেজটি প্রতিষ্ঠাকল্পে প্রদানের অঙ্গীকার করলে কলেজ প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ গতি পায়। সভায় সর্ব সম্মতিক্রমে ২০ সদস্য বিশিষ্ট কলেজ সাংগঠনিক কমিটি তথা প্রতিষ্ঠা কমিটি গঠন করা হয়।
১। প্রফেসর বদিউজ্জামান ভূইঁঞা (সিনিয়র শিক্ষক),
২। নিগার সুলতানা(সকারি অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান),
৩। মমতাজ জাহান মণি(সহকারী অধ্যাপক),
৪। তোজাম্মেল আহমেদ(প্রভাষক),
৫। হেদায়েতুল ইসলাম হেদায়েত(প্রভাষক)
৬৷ কানিজ ফাহিমা(প্রভাষক)।
১। শেখ মোঃ শরীফুল আলম(সহকারি অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান),
২। মোঃ আকরাম হোসেন খান(প্রভাষক),
৩। মোঃ মাহফুজুর রহমান(প্রভাষক),
৪। সাদিকুল ইসলাম আকন্দ(প্রভাষক),
৫। নাজনীন সুলতানা(প্রভাষক),
৬। কামাল হোসেন(প্রভাষক)।
১। প্রফেসর মোস্তাগিজ বিল্লাহ(সিনিয়র শিক্ষক),
২। এ.কে.এম. দেলোয়ার হোসেন(সহকারি অধ্যাপক এবং বিভাগীয় প্রধান),
৩। হুমাইয়ূন রশীদ রূপন(প্রভাষক),
৪। সালমা জাহান(প্রভাষক),
৫। সুব্রত চৌধুরি(প্রদর্শক),
৬। মোঃ আওলাদ হোসেন(প্রদর্শক)।
১। প্রফেসর আব্দুল হাই(সিনিয়র শিক্ষক),
২। কাজী মোঃ হাদিউল ইসলাম টুটুল(সহকারি অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান),
৩। বেলাল আহমেদ(প্রভাষক),
৪৷ শহিদুল ইসলাম(প্রভাষক)।
১। প্রফেসর সুভাষ দেবনাথ(সিনিয়র শিক্ষক),
২। মোঃ মিজানুর রহমান(সহকারি অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান),
৩। অভিজিৎ দেবনাথ(প্রভাষক),
৪। মশিউর রহমান(প্রভাষক),
৫। জহিরুল ইসলাম(প্রদর্শক),
৬। মাহমুদ হাসান(প্রদর্শক)।
১। শরীফ মোঃ গোলাম কবির(সহকারি অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান),
২। মোঃ সাখাওয়াত হোসেন টিটু(প্রভাষক),
৩। মোহাম্মদ রেজাউল করিম(প্রভাষক),
৪। মাহমুদুল হাসান ইকবাল(প্রদর্শক),
৫। নূর নবী(প্রদর্শক)।
১। প্রফেসর জয় গোপাল সাহা(সিনিয়র শিক্ষক; প্রাণিবিজ্ঞান),
২। প্রফেসর মানিক লাল সাহা(সিনিয়র শিক্ষক; উদ্ভিদবিজ্ঞান),
৩। আসিফ মিনহাজ সেতু(সহকারি অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান; উদ্ভিদবিজ্ঞান),
৪। আবদুল্লাহ আল নোমান(প্রভাষক; প্রাণিবিজ্ঞান),
৫। নিলোৎপমা রানী দেব(প্রদর্শক),
৬। মিসেস অজন্তা(প্রদর্শক)।
১। খোকন কুমার দাস(সহকারি অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান),
২। বিশ্বজিৎ কর্মকার (প্রভাষক)।
১। ফারজানা নাসরিন খান(প্রভাষক),
২। মোঃ রিফাতুল ইসলাম তালুকদার(প্রভাষক)।
১। নাহরিন জাহান(সহকারি অধ্যাপক),
২। শহিদুল ইসলাম(প্রভাষক)।
১। ফাতেমা বিনতে আহসান(প্রভাষক)।
১। মোঃ ফরহাদ আহমেদ(প্রভাষক)।
১। মোঃ মফিজুন নূর খোকা(সহকারি অধ্যাপক)।
১। প্রফেসর পরেশ চন্দ্র বসাক(সিনিয়র শিক্ষক),
২। শওকত জাহান সাকু(সহকারি অধ্যাপক)।
১। ফরিদা ইয়াসমিন(সহকারি অধ্যাপক)।
১। ফেরদৌসী বেগম(সহকারি অধ্যাপক),
২। আবিদুল খালিদ হায়দার(প্রভাষক)।
১। এনায়েতুর রহমান(সহকারি অধ্যাপক),
২। মোঃ মিজানুর রহমান(প্রভাষক)।
Revised By: Nahian Anmun
শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম কলেজে ভর্তি প্রক্রিয়া তীব্র প্রতিযোগিতামূলক। মাধ্যমিক পরীক্ষার ফলাফলের উপর ভিত্তি করে বোর্ড কর্তৃক প্রদানকৃত তালিকা থেকে ভর্তি করা হয়।
বাংলা মাধ্যমে এখানে উচ্চমাধ্যমিক শ্রেণীতে পড়ানো হয়।
শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম কলেজ জাতীয় শিক্ষাক্রম অনুসরণ করে থাকে। এখানে বিজ্ঞান, মানবিক, ব্যবসায় শিক্ষা এই তিন বিভাগের শিক্ষার্থীদের জ্ঞানার্জনের সুযোগ রয়েছে।
প্রতি বছরই এইচএসসি পরীক্ষায় ঢাকা বোর্ডের শীর্ষ ২০ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্য স্থান করে নেয়।
Revised By:Nahian Anmun
শিক্ষাবর্ষ | ছাত্রসংখ্যা | উত্তীর্ণ ছাত্র | পাসের শতকরা হার | জি.পি.এ-৫ প্রাপ্ত ছাত্রের সংখ্যা | ঢাকা শিক্ষা বোর্ডে অবস্থান | তথ্যসূত্র |
---|---|---|---|---|---|---|
২০১০ | ২৮২ | ১৩তম | ||||
২০১১ | ৩৩৬ | ১৪তম | ||||
২০১২ | ৫১২ | ১৩তম | ||||
২০১৩ | ৪৪৪ | ৮ ম | ||||
২০১৪ | ৬২১ | ২১তম | ||||
২০১৫ | ৯৯.২৩% | ৩৯২ | ৭ম | |||
২০১৬ | ৪৬৮ | |||||
২০১৭ | ৯৮.২৯% | ৩১৯ | ||||
২০১৮ | ৯৮.৩৭% | ২৪২ |
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস